ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) -
বিজ্ঞান -
বিজ্ঞান অনুশীলন বই |
| NCTB BOOK
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশন
এই শিখন অভিজ্ঞতায় তোমরা ক্লাসের সকলে মিলে একটা খেলার আয়োজন করবে। খেলার জন্য ছুটির দিন হলেই ভালো, কী বলো? তবে সেটা যদি সম্ভব না-ও হয়, পরপর কয়েকদিনের বিজ্ঞান পিরিয়ডেও এই কাজগুলো করে নিতে পারো।
শিক্ষকের সহায়তায় তোমাদের বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে অথবা খোলা জায়গাতে একটুখানি সমতল জায়গা খুঁজে নিতে পারো কিনা দেখো।
প্রথমেই দল ভাগ করার পালা। শিক্ষকের সহযোগিতায় দলে ভাগ হয়ে যাও। প্রতি দলের একেক সদস্য একেকটি খেলায় অংশ নিতে পারবে। ৪টি খেলার জন্য অন্তত ৪ জন সদস্য করে এক একটি দল হবে। দলের সবাই মিলে নিজেরা আলোচনা করে ঠিক করে নিতে পারো কে কোন খেলায় অংশ নেবে, সবার নিশ্চয়ই একই ধরনের খেলা খেলতে ভালো লাগে না। কোনো দলের একাধিক সদস্য একই খেলায় যোগ দিতে পারবে না। এখানে মনে রাখতে হবে দলের সব সদস্যের স্কোর মিলেই চূড়ান্ত ফল নির্ধারিত হবে।
দল ভাগ করা শেষে খেলার আয়োজনের পালা। খেলাগুলোর ধারাবাহিকতা কীভাবে হবে, খেলার নিয়ম কী কী কী কাজ করতে হবে ইত্যাদি নিয়ে শিক্ষকসহ সবাই মিলে আলোচনা করে ঠিক করে নাও। এছাড়াও খেলাগুলো আয়োজন করতে যা যা দরকার সেসবও জোগাড় করে ফেলতে হবে। প্রত্যেকটা দল কোনো না কোনো খেলা আয়োজনের দায়িত্বে থাকবে। লটারি করে এই দায়িত্ববণ্টন করা হবে। কোন কোন দল কোন খেলার দায়িত্ব নিচ্ছে তা নিচের ছকে লিখে নাও।
ছক-২
খেলার নাম
আয়োজনের দায়িত্ব কোন কোন দল থাকবে
এবার খেলার জায়গাটা গুছিয়ে খেলার উপযোগী করে নিতে যা যা প্রয়োজন; যেমন- মাঠ পরিস্কার করা, সমান করা, খেলার জন্য চুন দিয়ে দাগ দেওয়া ইত্যাদি ক্লাসের সবাই মিলে হাত লাগিয়ে করে ফেলো। কথায় আছে, দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।
খেলার আয়োজনে তো বেশ কিছু উপকরণ লাগবে, তাই না? এই যেমন- চুন বা মাঠে দাগ দেওয়া যায় এমন কিছু, গজ ফিতা, দড়িলাফের দড়ি, টেনিস বল, স্টপ ওয়াচ বা ঘড়ি, ক্যারম বোর্ড, গুটি ও বোরিক পাউডার ইত্যাদি। সেগুলো কীভাবে জোগাড় করা যায় ভেবে দেখো তো? চাইলে শিক্ষকের সহায়তাও নিতে পারো।
তারপর শিক্ষকের সাহায্যে মাঠের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত ১০০ মিটার ( পুরো ১০০ মিটার লম্বা জায়গা না পেলে সর্বোচ্চ যতটা লম্বা পাওয়া যায়) মেপে দাগ দিয়ে নাও, যেখানে দৌড় প্রতিযোগিতা হবে। দড়িলাফের জন্য সমতল জায়গা নির্বাচন করে নিলেই হবে। ভার নিক্ষেপের জন্য যেখান থেকে নিক্ষেপ করা হবে ও ভার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে যতটুকু দৌড়ে আসতে হবে সেখানে চুন দিয়ে দাগ কেটে দাও। ক্যারম খেলার জন্য সবচেয়ে ভালো হয় যদি মাঠের একপাশে ছায়াযুক্ত কোনো স্থান পেয়ে যাও সেখানে কোনো টুলের ওপর বোর্ডটা বসিয়ে উঁচু করে নিতে পারো, কিংবা তোমাদের ক্লাসের বেঞ্চ-টেবিলও ব্যবহার করতে পারো।
সব খেলারই কিছু নিয়ম থাকে তোমরা জানো। নিয়ম ছাড়া খেললে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তাই শুরুতেই শিক্ষকসহ সবাই মিলে আলাপ করে কিছু নিয়ম ঠিক করে নাও, যেই নিয়মে খেলাগুলো পরিচালিত হবে।
প্রথমেই হবে দৌড় প্রতিযোগিতা-
প্রত্যেক দলের দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত সদস্য দৌড় শুরুর লাইনে এসে দাঁড়াবে।
শিক্ষক বাঁশিতে ফুঁ দিলে দৌড় শুরু করবে।
শিক্ষক স্টপওয়াচ ব্যবহার করে কোনো প্রতিযোগীর ১০০ মিটার (কিংবা যে দুরত্ব ঠিক করা হয়েছে) অতিক্রম করতে কতক্ষণ সময় লেগেছে তা লক্ষ করবেন, এই খেলার আয়োজনের দায়িত্বে যেসব দল থাকবে তারাও ঘড়ি/স্টপওয়াচ ব্যবহার করে সময় নোট করবে। শিক্ষকের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে নিচের ছকে নোট নেবে।
প্রতিযোগীর নাম
দূরত্ব (m)
সময় (s)
অবস্থান (ক্রম)
এবার দড়ি লাফের পালা-
এই খেলায় অংশগ্রহণকারীরা গোল হয়ে দাঁড়াবে।
শিক্ষক বাঁশিতে ফুঁ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেলা শুরু করবে। দড়িটাকে মাথার ওপর দিয়ে ঘুরিয়ে পায়ের পাতার নিচ দিয়ে গলিয়ে এনে বারবার যে সবচেয়ে বেশি সময় ঘুরাতে পারবে সেই বিজয়ী।
তোমরা যারা খেলাটি দেখছিলে তারা লক্ষ করো তো- দড়িটা কি বৃত্তাকারে বারবার একদিক থেকে ঘুরে বিপরীত দিকে আসছে-যাচ্ছে?
প্রতিটা দল থেকে সেই দলের সদস্য কতটি পাক দিয়েছে অর্থাৎ পেছন থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে আবার পেছনে নিতে পেরেছে তা গুনে রাখবে। আর প্যাঁচ লাগার আগ পর্যন্ত কতটি পাক দিলো, কত সময় ধরে খেলল তার হিসাব রাখবে। শিক্ষক এখানে স্টপওয়াচের মাধ্যমে সময়ের হিসাব রাখতে সাহায্য করবেন। তুমি পরে শিক্ষকের কাছ থেকে সময়টা মিলিয়ে নেবে।
তোমার দলের প্রতিযোগী দড়িলাফে পায়ের সঙ্গে দড়ির প্যাঁচ না লাগিয়ে কতক্ষণ খেলতে পেরেছে তা নিচের ছক-৪ এ লিখে ফেলো তো।
ছক-৪
প্রতিযোগীর নাম
মোট কতবার ঘুরিয়েছে / পাক সংখ্য
কতক্ষণ খেলেছে (s)
প্রতি সেকেন্ডে কত পাক দিয়েছে
অবস্থা (ক্রম)
অন্যদিকে ভার নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিশ্চয়ই শেষ। ভার নিক্ষেপের জন্য পেশাদার খেলোয়াররা যা ব্যবহার করে তা কখনো হাতে নিতে দেখেছ? অ-নে-ক ভারি না? তার চেয়ে বরং কাপড়ের ব্যাগের ভেতরে টেনিস বল অথবা রাবারের বল ভরেও এই খেলাটা খেলা যায়। তবে তোমাদের অন্য কোন আইডিয়া থাকলেও ভেবে দেখতে পারো।
কাপড়ের ব্যাগে বলটাকে ভরে সেটার মুখ দড়ি দিয়ে বেঁধে দাও। দড়িটা এমনভাবে কেটে নাও যাতে ধরার জন্য অন্তত ১-২ ফুট অতিরিক্ত দড়ি থাকে। এই দড়িটা ধরেই ঘুরিয়ে সেটিকে সামনের দিকে ছুঁড়ে মারতে হবে।
যে ভার নিক্ষেপ করবে সে দড়িটাকে ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে এসে শুরুর লাইনে পা রেখে যতটা সম্ভব দূরে ছুঁড়ে মারার চেষ্টা করবে। যার বল যতদূরে গিয়ে থামবে সেই বিজয়ী।
যারা ভারটা নিক্ষেপ করছ, তারা লক্ষ করো-
বলসহ ব্যাগটা দড়ির সঙ্গে লাগানো অবস্থায় তোমার কী অনুভূতি হচ্ছে?
তুমি দড়িটাকে টেনে ধরে আছো, বলটা কি সামনের দিকে ছুটে যেতে চাইছে?
তোমার দলের প্রতিযোগীর ছোঁড়া বলটা কতদূরে গিয়ে থামল, তা নিচের ছক-৫ এ লিখে রাখবে।
ছক-৫
প্রতিযোগীর নাম
দূরত্ব (m)
অবস্থান (ক্রম)
ভার নিক্ষেপের সময় তোমার দলের প্রতিযোগীর ছুঁড়ে দেয়া ভার কীভাবে উপরে উঠেছিল আবার কীভাবে নিচে নেমে এসেছিল তার ছবি নিচের ফাঁকা জায়গায় এঁকে রাখো।
তোমার আঁকা ছবিতে বলটি সোজা সামনের দিকে না গিয়ে বারবার নিচের দিকে বাঁকা হয়ে পড়ল কেন? তোমার ধারণা নিচে টুকে রাখো!
এবার ক্যারম খেলার পালা। ক্যারম কোথায় খেলবে সবাই আলাপ করে ঠিক করেছ। নিশ্চয়ই! দলের যেই সদস্য খেলায় অংশ নেবে সে তো খেলায় ব্যস্ত থাকবে, বাকিদের কাজ কিন্তু আগের মতোই খেলার দিকে লক্ষ রাখা। আর তোমার দল যদি খেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকে তাহলে তো কাজ আরো বেশি!
ক্যারমের গুটি ফেলার পয়েন্টের উপর হার-জিত নির্ভর করবে। একটি সাদা গুটি পকেটে ফেলার জন্য দশ পয়েন্ট; একটি কালো গুটির জন্য পাঁচ এবং লাল গুটির জন্য ২০ পয়েন্ট। তবে লাল গুটি কেউ যে দানে ফেলবে ঠিক তার পরের দানেই অন্য একটি গুটিকে পকেটে ফেলতে হবে। তাছাড়া লাল গুটির পয়েন্ট যোগ হবে না, গুটিটিকে আবার মাঝখানে রাখতে হবে।
খেলার সময় সবাই ভালো করে লক্ষ করবে-
গুটিগুলো কীভাবে একটার সঙ্গে অন্যটা টোকা লেগে এদিক সেদিক ছুটছে?
পথিমধ্যে অন্য গুটির সঙ্গে যদি ধাক্কা না লাগে তাহলে একটা নির্দিষ্ট গুটির গতিপথ কি নির্দিষ্ট দিকেই থাকে নাকি পরিবর্তন হয়?
ধাক্কা লাগার পরে কীভাবে ও কোন দিকে পরিবর্তন হয়?
তোমার দলের প্রতিযোগীর খেলার স্কোর ছক ৬ এ লিখে ফেলো।
ছক-৬
সদস্য
সাদা গুটি (১০ টি)
কালো গুটি (৫ টি)
লাল গুটি (২০ টি)
মোট পয়েন্ট
অবস্থান
ক্যারমের গুটির সঙ্গে স্ট্রাইকের ধাক্কা লাগার পর স্ট্রাইকের গতিপথ কি পরিবর্তিত হচ্ছে? নিচে ছবি এঁকে দেখাও তো! আর ভেবে বলো- কেন গুটিগুলোর গতির দিক পরিবর্তন হচ্ছে?
আচ্ছা ক্যারম বোর্ডে যে বোরিক পাউডার দেওয়া হয়েছিল মনে আছে? বোরিক পাউডার কেন দেয়া হয় বলো তো? না দিলেই বা কী হয়? তোমার উত্তর নিচের ফাঁকা জায়গায় লিখে রাখো।
খেলাধুলা তো অনেক হলো! কোন খেলায় কে জিতল তা হিসাব করে কোন দল বিজয়ী সেসব পরে ঠিক করা যাবে। তার আগে এই খেলাগুলোকে আরেকটু খুঁটিয়ে দেখলে কেমন হয়?
বাড়ির কাজ
আজ তোমরা যেসব খেলায় অংশ নিলে সেখানে তো নানাধরনের গতির ব্যাপার ছিল। অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে বিভিন্ন ধরনের গতির অংশটা ভালো করে পড়ে নিচের ছক ৭ এ তোমাদের খেলার সঙ্গে এসব গতির কোনো মিল পাও কিনা তা ভেবে দেখো তো! কোনো মিল চোখে পড়লে নির্দিষ্ট কলামে টিক চিহ্ন দিয়ে রাখতে পারো।
ছক-৭
খেলার নাম
সরল গতি
বক্র গতি
ঘূর্ণন গতি
পর্যাবৃত্ত গতি
চতুর্থ ও পঞ্চম সেশন
বাসায় বসে তো বিজ্ঞান বই থেকে বিভিন্ন ধরনের গতি সম্পর্কে কিছুটা জেনে এসেছ। এবার বন্ধুদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে দেখো তারা কী ভাবছে, তোমাদের খেলাগুলোর সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পেয়েছে কিনা! তোমাদের ধারণায় কি কোনো পার্থক্য দেখছ?
এবার নিচের এই বিভিন্ন ধরনের গতি আর কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় তা তোমার পাশের বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে ছক-৮ লিখে ফেলো।
ছক-৮
বিভিন্ন প্রকার গতি
উদাহরণ:
সরল গতি
বক্র গতি
ঘূর্ণন গতি
পর্যাবৃত্ত গতি
তুমি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ। যখন দৌড় প্রতিযোগিতা হয়েছিল, তখন একেকজন একেক সময়ে দূরত্বটা অতিক্রম করেছে। কেউ করেছে অনেক তাড়াতাড়ি কেউ একটু ধীরে। তার মানে সবার গতি একই রকম ছিল না। কম-বেশি ছিল।
চলো এবার আমরা গতির পরিমাপ করা শিখে নেই। এটা হিসাব করা খুব সহজ। দৌঁড় প্রতিযোগীরা প্রতি ১ সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করেছিল, সেটিই হচ্ছে তাদের বেগ। অর্থাৎ মোট দূরত্বকে সময় দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায় তাই বেগ।
ছক-৩ থেকে তোমার দলের সদস্য যে দৌড়ে অংশ নিয়েছিল তার বেগ কত তা পরের পৃষ্ঠার ফাঁকা জায়গায় হিসাব করে বলো তো।
এই গতি যদি কমতে বা বাড়তে থাকে একে বিজ্ঞানের ভাষায় কী বলে জানো তো? না জানলে বই থেকে চোখ বুলিয়ে নাও।
এবার অন্য বিষয়ে আসা যাক। দৌড়ে অংশ নেবার পরে তুমি বা তোমার বন্ধুর অভিজ্ঞতাটা আরেকবার কল্পনা করে দেখো তো? দৌড় শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই কি থেমে যেতে পেরেছিলে? নাকি আরো কয়েক কদম এগিয়ে থামতে হয়েছিল?
তোমরা ইতোমধ্যেই জানো বল প্রয়োগ না করলে কোনো বস্তুর গতি পাল্টায় না, বা গতিপথ বেঁকেও যায় না। যেকারণে কোনো কিছুকে ধাক্কা দিলে তা থেমে যাবার আগ পর্যন্ত সোজা পথেই যেতে থাকে। আবার উপরের দিকে ছুঁড়ে দেয়া বস্তু ঠিকই বাঁকাপথে ঘুরে নিচে এসে পড়ে; এর পেছনেও এক ধরনের বলই দায়ী- তা হলো পৃথিবীর নিজের দিকে আকর্ষণ বল যাকে আমরা বলি মাধ্যকর্ষণ বল। থেমে থাকা বস্তু বা গতিশীল বস্তু, সবাই যে যেভাবে রয়েছে, সেভাবেই থাকতে চায়। কিন্তু সত্যিই কি তাই? তোমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা কী বলে? আবার ক্যারম খেলার অভিজ্ঞতা ভেবে দেখো তো!
ক্যারম খেলার সময় আস্তে টোকা দিলে গুটি একটু এগিয়ে থমকে যায় না? এটা কেন ঘটে? আবার বোরিক পাউডার দিলে কি গুটির গতির কোনো পরিবর্তন হয়?
নিজেরা আলোচনা করে দেখো কে কী ভাবে? এবার তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে বলের ধারণা এবং বিভিন্ন ধরনের বলের অংশটুকু পড়ে নাও। তোমাদের ধারণার সঙ্গে কোনো মিল পাচ্ছ? বন্ধুরা আলাপ করে দেখো।
এবার আরেকটা বিষয় আলোচনা করা যাক। ক্যারম খেলার সময় খেয়াল করেছ যে একটা গুটি যত জোরে গিয়ে অন্য গুটিকে ধাক্কা দেয় সেটি তত বেশি গতিতে ছিটকে অন্যদিকে ছুটে যায়? এর কারণ কী? তার মানে গুটির গতির ফলে এক ধরনের শক্তি সৃষ্টি হচ্ছে, গতি যত বেশি হচ্ছে তার মধ্যে তত বেশি শক্তি সৃষ্টি হচ্ছে। একইভাবে থেমে থাকা বস্তুর মধ্যেও কি শক্তি জমা থাকতে পারে?
তোমাদের বিজ্ঞান বই থেকে শক্তির অংশটুকু পড়ে নিয়ে দলের সবাই মিলে আলাপ করে দেখো। এবার চিন্তা করে একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। ধরো, একটা বল উপর থেকে পড়ছে, বলটা বেশি উপর থেকে পড়লে কি বেশি জোরে পড়বে? নাকি যে উচ্চতা থেকেই পড়ুক একই রকম জোরে নিচে এসে পড়বে? সবাই আলোচনা করে উত্তর দাও। তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তিগুলোও লিখতে ভুলো না যেন!
তোমাদের ধারণাটা ঠিক কিনা তা এবার পরীক্ষা করে দেখা যাক। অনেক ভাবেই এই পরীক্ষা করে দেখা যায়। টেবিলের সামান্য উপর থেকে একটা ডাস্টার যদি ছেড়ে দাও তাহলে যে শব্দ হবে, খানিকটা উপর থেকে ফেললে কি শব্দটা তার চেয়ে জোরে হয় নাকি আস্তে? পরীক্ষাটা পানিতে করলে আরো সহজ হবে। পানির অল্প উপর থেকে একটুকরো পাথর বা নুড়ি ছেড়ে দিলে যেই গতিতে পড়ে, অনেক উপর থেকে ফেললে কি তার চেয়ে জোরে পড়বে? সহজেই সেটা পরীক্ষা করে দেখতে পারো, নিচে ছলকে ওঠা পানির দিকে তাকালেই পরিষ্কার বুঝতে পারবে।
খেলা হলো, খেলা থেকে নানা ধরনের গতি নিয়ে জানাও হলো; কিন্তু একটা বড় কাজ বাকিই পড়ে আছে- উপহার তৈরি, যা সবাই মিলে তৈরি করতে হবে।
আগেই বলা হয়েছিল এ খেলায় দলীয়ভাবে বিজয়ী দলের জন্য পুরস্কার তোমরাই তৈরি করবে। পুরস্কার হিসেবে হতে পারে হাতের তৈরি যেকোনো কিছু। যেমন শুভেচ্ছা কার্ড, কাগজের তৈরি ফুল, পাখি কিংবা ট্রফির (কাপ) মডেল ইত্যাদি। তোমরা নিজেরা আলোচনা করে ঠিক করে নাও কী বানাবে, তারপর ক্লাসের পরে অথবা বাড়ি থেকে বানিয়ে আনবে।
এবার তাহলে বিজয়ী দল ঘোষণার পালা। চারটি খেলার ইভেন্ট মিলিয়ে যে দল সবচেয়ে বেশি স্কোর পেয়েছে সে দল বিজয়ী। এখানে চুপি চুপি একটা কথা বলে রাখি- অন্য দলগুলোর সবাই বিজয়ী দলকে হাতে বানানো উপহার দেবে তা ঠিক, কিন্তু বিজয়ী দলকেও বাকি সবাইকে চকলেট খাওয়াতে হবে! তাহলে হেরে যাওয়াটা বেশি একটা খারাপ ব্যাপার না, কী বলো?